প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা

প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা পর্ব ৩ সরকারী চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা

প্রিয় পাঠক প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা সিরিজের নতুন আরেকটি পোস্টে আপনাকে জানাই স্বাগতম। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে সচেতন করতে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা নামে নতুন একটি সিরিজ চালু করেছি। বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অনুযায়ি বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা ৪৬ লাখ। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠী হিসেবেই পরিচিত তাই প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে সমাজ ও দেশের মুল ধারায় সম্পৃক্ত করতে বাংলাদেশ সরকার এবং বিভিন্য বেসরকারী সংস্থা প্রতিবন্ধীদের বিভিন্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে, কিন্তু আমাদের দেশের বেশিরভাগ প্রতিবন্ধীই সে সম্পর্কে অবগত নয়। প্রতিবন্ধীদের নিজ অধিকার এবং সরকারী ও বেসরকারী সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে অচেতন করা আমাদের নৈতিক দায়িক্ত। প্রতিবন্ধীরা যদি নাই জানে সরকার ও বিভিন্য এনজিও তাদের কি ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয় তবে সরকার ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কল্যাণমুলক প্রকল্পগুলি আশানরুপ ফল পাবে না, তাই প্রতিবন্ধীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্ট্রি কল্পে আমরা এই নতুন সিরিজটি শুরু করেছি।

প্রিয় পাঠক আজ আমরা একটি বিশেষ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব, আমাদের আজকের আলেচ্য বিষয় হল সরকারী চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা। আমি যেহেতু প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করি তাই প্রচুর মানুষ আমার কাছে জানতে চায় সরকারী চাকরেিত প্রতিবন্ধীদের কোন সুযোগ সুবিধা আছে কি না। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য আমি প্রচুর প্রতিবন্ধী ভাই বোনদের নিকট থেকে প্রচুর অনুরোধ পেয়েছি। অনেক চিন্তা ভাবনা করে দেখলাম এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে, কারণ সকল প্রতিবন্ধীদের জানা থাকা দরকার বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীদের সরকারী চাকরিতে কি ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করে। সকল পাঠকদের নিকট আমার বিণিত অনুরোধ এই পোস্টটি সম্পুর্ণ পড়বেন তা না হলে অনেক কিছুই আপনার জানা বোঝার বাইরে থেকে যাবে এবং আপনার পরিচিত অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের সাথে এই পোস্টটি অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না কারণ শুধু আপনি জানলেই তো তবে না সকল প্রতিবন্ধীদের জানতে হবে।

সরকারী চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা

বাংলদেশ সরকার, সরকারী চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের বিশেষ সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে আর হল হল বাংলাদেশ সরকার সরকারী চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ কোটা বরাদ্দ করেছে। বিগত শেখ হাসিনার সরকারের সময় সরকারী চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ কোটা বরাদ্দ ছিল তবে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য বিভিন্য সময় বাংলাদেশে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা আন্দোলন করেছে। ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের জন্য সর্বমোট তিনবার আন্দেলন হয়েছে, আন্দোলনের কারণ প্রথানত মুক্তিযোদ্ধা কোটা একেতো সরকারী চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাশত কোটা সংরক্ষিত হয় এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে মেয়ে ও নাতী নাতনিদের মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধাভোগি করা হয় যার ফলে সাধারণ চাকুরি প্রার্থী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে খোভ বারতে থাকে। পরবর্তিতে ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোল এক পর্যায়ে সরকার পতনের আন্দলনে রুপ নেয়। আন্দলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে এবং প্রথানমন্ত্রি শেখ হাসিনা সহ সরকারের মন্ত্রি এমপিদের অনেকেই বাংলাদেশ ছেড়ে ভারত সহ বিভিন্য দেশে পালিয়ে যায়।

তবে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটার আগে শেখ হাসিনার সরকার কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে, বিগত সময়ে প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত কোটার পরিমাণ ছিল ১ শতাংশ তবে বর্তমানে সেই এক শাতংশ কোটা প্রতিবন্ধী এবং হিজরাদের জন্য নির্ধারিত আছে। তাই বিগত সময়ের তুলনায় প্রতিবন্ধীদের কোটার পরিমাণ কেমেছে। যাই হোক আপনি যদি একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হন তবে সরকারী চাকরিতে আপনি এই কোটা দাবি করতে পারবেন।

প্রতিবন্ধী কোটা কাকে বলে

এবার আসুন আমরা আলোচনা করি চাকরিতে কোটা বলতে আসলে কি বোঝায়, আমরা তো অনেকেই শুনে আসছি প্রতিবন্ধীদের সরকারী চাকরিতে কোটা আছে কিন্তু আমরা এখনও অনেকেই জানিন না কোটা বলতে আসলে কি বোঝায় কিংবা সরকারী চাকরির কোটা বলতে কি বোঝায়। আপনাদের এসকল প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করব এখন। আমরা কিছুক্ষন আগে আলোচনা করেছি প্রতিবন্ধী ও হিজরাদের জন্য সরকারী চাকরিতে ১ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত আছে, এর মানে হল যদি ১০০ জনের সরকারী চাকরি হয় তবে অন্তত একজন হিজরা কিংবা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির চাকির হতে হবে। বাংলাদেশে সরকারী চাকরির পদসংখ্যা প্রায় ১৯ লাখ। যেখানে এখনও সাড়ে তিন লাখ পদ শূন্য আছে। একটু চিন্তা করে দেখুন তো ১৯ লাখ পদে যদি ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয় তবে কতজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির চাকরি হবে?। আমাদের উচিত যোগ্যতা অনুযায়ি সরকারী চাকরিতে আবেদন করা এবং প্রতিবন্ধী কোটার সঠিক বিন্যাস হচ্ছে কি না তার প্রতি সতর্ক দৃষ্ট্রি রাখা। সরকার শুধুমাত্র প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারী চাকরিতে কোটা দিয়েছে এমনটাই কিন্তু নয় সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারী চাকরিতে বয়স সীমাও বৃদ্ধি করেছে নিচে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

সরকারী চাকরিতে প্রতিন্ধীদের প্রবেশের বয়সসীমা কত

বাংলাদেশ সরকার সরকারী চাকরিতে প্রতিবন্ধী ও হিজরাদের জন্য ১% কোটা সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি শুধুমাত্র প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারী চাকরিতে যোগদানের বয়সসীমা দুই বছর বৃদ্ধি করেছে। অন্যান্য চাকুরিপ্রার্থীদের যেখানে সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ সেখানে প্রতিবন্ধীদের সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২। তবে বর্তমানে সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্য পর্যায়ে আলোচনা চলছে, এমনকি বর্তমান অন্তবর্তি সরকারের ভেতরেও সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্দিকল্পে আলোচনা চলছে। বিভিন্য পর্যায় থেকে দাবি উঠেছে সাধারণ প্রার্থীদের জন্য সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার।

সরকার যদি তাদের এ দাবি মেনে নেয় তবে প্রতিবন্ধীদের জন্য শিখিলযোগ্য অতিরিক্ত দুই বছর বাতিলও হতে পারে, যদি বাতিল হয় তবে প্রতিবন্ধীদের সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা হবে ৩৫ বছর। আর যদি শিখিলযোগ্য বয়স বাতিল না করা হয় তবে প্রতিবন্ধীদের সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা হবে ৩৭ বরছ, প্রিয় পাঠক আগেই কিন্তু আমাদের কোন মন্তব্য করা উচিত হবে না। এখনও সরকার এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি, সরকার যে সিদ্ধান্তই গ্রহণ করুন না কেন আমরা তা আমাদের ওয়েবাসইটে জানিয়ে দেব তাই প্রতিবন্ধীতা সম্পর্কিত সকল তথ্য সবার আগে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত চোখ রাখুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button