প্রতিবন্ধীদের আত্বকর্মসংস্থান

প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান পর্ব ৪ অল্প পুঁজির ব্যবসা

প্রিয় পাঠক প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান সিরিজের নতুন আরেকটি পোস্টে আপনাকে জানাই স্বাগতম। প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান সিরিজের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করছি প্রতিবন্ধীদের কপ্লিট ডাইনলাইন দিতে, যাতে করে প্রতিবন্ধীরা আত্ব নির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে। আমরা আগের পর্বগুলিতে আলোচনা করেছি বাংলাদেশের চাকরির বাজার প্রতিবন্ধীদের জন্য কতটা সংকির্ণ। তাই চাকরির পিছনে না ঘুরে আমাদের উচিত নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিজেই করা। বর্তমান সময়ে প্রতিবন্ধীদের করার মত অনেক কাজ আছে শুধুমাত্র কাজের প্রতি শ্রোদ্ধা এবং ইচ্ছশক্তি থাকলেই আমরাও বেকারত্বকে দুর করে আত্বনির্ভরশিল হতে পারি। আজ বিগত পর্বের মতই খুব অল্প পুজির একটি ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করতে যাচ্ছি। আপনাদের বলে রাখি আপনাদের সাথে আজ যে ব্যবসার কথা শেয়ার করব সে ব্যবসা আমি নিজে করেছি। তাই মনে করলাম এই ব্যবসার আইডিয়াটি আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক।

অল্প পুঁজির ব্যবসা

তো আর কথা না বাড়িয়ে মুল আলোচায় প্রবেশ করা যাক। একটি কথা আগে থেকেই বলে রাখা ভাল এই ব্যবসাটি কিন্তু সব ধরণের প্রতিবন্ধীরা করতে পারবেন না, এই ব্যবসা করতে হলে দির্ঘ সময় হাটাচলা করার শারীরিক সক্ষমতা থাকতে হবে। যদি আপনার দির্ঘ সময় হাটাচলা করার শারীরিক সক্ষমতা না থাকে তবে এই পেশাটি আপনার জন্য নয়। আমি দশ টাকা দামের বই বিক্রি করার কথা বলছি। আমরা অনেকেই ছোটবেলায় ৫ টাকা দিয়ে ১৬ পাতার ছোট গল্পের বই ক্রয় করতাম। আমরা যদি সেই বই বিক্রির ব্যবসা শুরু করি তবে কেমন হয়। এই ব্যবসা করতে আপনার তেমন কোন পুঁজির প্রয়োজন নেই। মাত্র কয়েকশত টাকা থাকলেই এই ব্যবসা শুরু করা যায়। দশ টাকা দামের এসকল ছোট গল্পের বই তিন থেকে সারে তিন টাকা পাইকারী দামে কিনতে পাওয়া যায়। আপনি যদি তিনশত বা সারে তিনশত টাকা দিয়ে ১০০ পিস বই কিনেন, এবং সেই বই দশ টাকা দরে বিক্রি করেন তবে একদিনে আপনার আয় হবে ৬৫০ টাকা। প্রতিদিন যদি আপনি একশতটি করে বই বিক্রি করতে পারেন তবে চিন্তা করে দেখুন প্রতি মাসে আপনার আয় হবে ১৯ হাজার পাঁচশত টাকা।

বই কিনবেন কোথা থেকে

এই ব্যবসা করতে হলে প্রথমে আপনাকে পাইকারী দামে বই কিনতে হবে, এখন প্রশ্ন হল পাইকারী দামে কোথায় এসকল বই পাবেন। আপনি বাংলাদেশের যে প্রান্তেই বাস করেন না কেন আপনার জেলা শহরে নিশ্চই বই এর দোকান আছে। আপনি আপনার জেলা শহরে অবস্থিত বইয়ের দোকানগুলিতে খোজ করুন। খুচরা দশ টাকা মুল্যের বই কোথায় কিনতে পাওয়া যায় তার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। একটু খোজাখুজি করলেই আপনি এই বইয়ের সন্ধান পেয়ে যাবেন। বইয়ের দাম আপনাকে চালাকির সাথে নির্ধারণ করতে হবে। দোকানদার চাইবে আপনার কাছে বেমি দামে বই বিক্রি করতে। তবে মনে রাখবেন ১৬ পাতার এসকল ছোট গল্পের পাইকারী মুল্যে তিন থেকে সারে তিন টাকা বেশি না। আপনাকে তিন বা সারে তিন টাকা দিয়েই প্রতিটি বই ক্রয় করতে হবে। বই কেনার সময় খেয়াল রাখবেন ছেড়া ফাটা বই যাতে করে আপনাকে দেয়া না হয় কারণ ছেড়া ফাটা বই কেউ কিনতে চায় না।

বই কোথায় বিক্রি করবেন

বই তো কেনা হল এবার কথা হল বই কোথায় বিক্রি করা যায়?। এসকল বইয়ের প্রথানতম কেত্রা হল শিশুরা তাই আপনি আপনার এলাকার প্রতিটি প্রাইমারি এবং কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে বইগুলি নিয়ে যাবেন। ক্লাস শুরু হবার আগে যেতে হবে কারণ ওরা যে টাকা আনে সে টাকা ওরা খেয়ে নেয় তাই ক্লাস শুরু হবার অন্তত এক ঘন্টা আগে যদি আপনি বিদ্যালয়ে উস্থিত হতে পারেন তবে একটি স্কুলেই ১০০ টি বই বিক্রি করতে পারবেন। এভাবে আপনার গ্রামে থাকা প্রতিটি স্কুলে যদি একবার করে যান তবে আপনি বই বিক্রি করে শেষ করতে পারবে না। একটি ইউনিয়ন বা পৌড় ওয়ার্ডে তো আর একটা দুইটা স্কুল থাকেনা।

আপনি আপনার নিজ এলাকা এবং পরে আশপাশের এলাকার স্কুলগুলিতে বই বিক্রি করলেই আপনি ভাল পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারবেন। প্রতিটি স্কুলে মাসে ১ বার যাবে এজন্য সর্বমোট ৩০ টি স্কুল নির্ধারণ করতে হবে। সেই ৩০ টি স্কুলেই যদি আপনি পর্যায়ক্রমে বই বিক্রি করেন তবে প্রতি মাসে আপনি ভাল পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারবেন। আমার এই আইডিয়াটি আপনাদের কেমন লাগল তা আমি জানিনা তবে আমি তো নিজে এই ব্যবসা করেছি তাই আমি জানি এই ব্যবসায় ভাল পরিমাণ টাকা উপার্জন করা যায়।

Related Articles

2 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button