সমাজসেবার ঋণ কিভাবে পাওয়া যায়

প্রিয় পাঠক আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে জানাই সুস্বাগতম। আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় হল সমাজসেবার ঋণ কিভাবে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে সরকার প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান সৃষ্ট্রি জন্য বিভিন্য সুযোগ সুবিধা প্রদান করে আসছে। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীদের বিভিন্য কর্মমূচী প্রশিক্ষন দেয়, এসকল প্রশিক্ষনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া প্রতিবন্ধীরা যাতে করে নিজের আত্বকর্মসংস্থান সৃষ্ট্রি করতে পারে।
এজন্য বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রতিবন্ধীদের খুদ্র ঋণ প্রদান করে থাকে। আপনি যদি একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হন এবং ব্যবসা ও খাবার কিংবা অন্য কোন কাজের জন্য ঋণ সুবিধা চান তবে আপনিও সমাজসেবা থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। সমাজসেবার এই ঋণে কোন সুদ দিতে হয় তা তাই এই সুদমুক্ত ঋণ গ্রহণ করে আপনি আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
সমাজসেবার ঋণ কি
সমাজসেবা অধিদপ্তর সারা দেশে প্রতিবন্ধীদের মাঝে খুদ্র ঋণ প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশ সরকার সমাজসেবা অধিদপ্তরকে ঋণ দেয়ার জন্য মুলধন প্রদান করে। আপনি যদি একজন প্রতিবন্ধী হন কোন চাকরি না পেয়ে নিজেই নিজের কর্ম সংস্থান সৃষ্ট্রি করতে চান, কিংবা উদ্যক্তা হতে চান তবে আপনি সমাজসেবার ঋণ গ্রহণ করে সেই টাকা দিয়ে আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
সমাজসেবার এই ঋণ নিয়ে আপনি অনেক ভাবেই নিজের কর্ম সংস্থান সৃষ্ট্রি করতে পারবেন। যেমন আপনি চাইলে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে হাঁস মুরগি পালন বিষয়ক প্রশিক্ষন গ্রহণ করে নিজের বাড়িতে একটি ছোট খামার গড়ে তুলতে পারেন।
বর্তমানে হাঁস মুরড়ির ব্যবসা অত্যান্ত লাভ জনক ব্যবসা। কিংবা আপনি চাইলে সমাজসেবার ঋণ গ্রহণ করে সেই টাকা দিয়ে বাড়ির ওপর একটি মুদির দোকান করতে পারেন। সমাজসেবা একজন প্রতিবন্ধীকে প্রথমবার দশ হাজার টাকা ঋণ দেয়। আপনি যদি সেই ঋণের টাকা সঠিকভাবে পরিশোধ করতে পারেন তবে পরের বার বিশ হাজার টাকা ঋণ নিতে পারবেন। এভাবে আপনি পঞ্চশ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন।
সমাজসেবার ঋণের কিস্তি কত টাকা
আপনি যদি সমাজসেবা থেকে ঋণ গ্রহণ করেন তবে প্রথম চার মাস আপনাকে কিস্তি দিতে হবে না, যদি আপনি দশ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন তবে আপনাকে চার মাস পর এক হাজার পঞ্চাশ টাকা কিস্তি হিসেবে দিতে হবে। সমাজসেবার ঋণে কোন সুদ দিতে হয় না তবে ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। আপনি যদি দশ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন তবে আপনাকে সার্ভিস চার্জ সহ মোট দশ হাজার পাঁচশত টাকা পরিশোধ করতে হবে।
সমাজসেবার ঋণে কিস্তি সিস্টেম হর মাসিক, অর্থ্যৎ প্রতি মাসে একবার কিস্তি দিতে হবে অন্যান্য এনজিওর মত প্রতি সপ্তাহে কিস্তি দিতে হবে না। আপনি যদি বিশ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন তবে ঋণ গ্রহনের প্রথম চার মাস পর আপনাকে দুই হাজার একশত টাকা হারে কিস্তি পরিশোধ করতে হবে এভাবে আপনি যত টাকা ঋণ গ্রহণ করবেন তত টাকা কিস্তি হিসেবে ধার্য হবে।
সমাজসেবার ঋণ কিভাবে পাবেন
সমাজসেবার ঋণ পাবার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রতিবন্ধী হতে হবে, আপনি যদি প্রতিবন্ধী না হন তবে আপনি সমাজসেবার এই প্রতিবন্ধী ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন না। ঋণ গ্রহনের জন্য আপনাকে ঋণের জন্য আবেদন করতে হবে। প্রতি বছর একবার সমাজসেবার এই ঋণ বিতরন করা হয়, প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে ঋণের জন্য নতুন বরাদ্দ আসে।
তাই বছরের এই সময়ে আপনাকে সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। আপনার শহর/উপজেলা সমাজসেবা কার্যালে গিয়ে অফিসারের সাথে দেখা করে তাকে বলবেন আপনি ঋণ গ্রহণ করতে চান।
আপনার থেকে আপনার যাবতিয় তথ্যাদি জানার পর তিনি আপনাকে ঋণ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। আপনি চাইলে আপনার ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড সামজকর্মির সাথেও যোগাযোগ করতে পারেন। সমাজকর্মিকে জানাবেন আপনি সমাজসেবার ঋণ গ্রহণ করতে চান তিনি আপনাকে ঋণ প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সমাজসেবার ঋণ পেতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন
আপনি যদি সমাজসেবার ঋনের জন্য আবেদন করতে চান তবে আপনাকে কিছু কাগজ সরবরাহ করতে হবে। যেমন আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিতে হবে। আপনার প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিতে হবে। আপনার চার কপি রঙিন ছবি দিতে হবে। আপনি যদি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কোন প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন তবে সেই প্রশিক্ষনের সনদের ফটোকপি দিতে হবে। এসকল কাগজপত্র আপনার ঋণ আবেদন ফরমের সাথে পিন দিয়ে সংযুক্ত করতে হবে।
সমাজসেবা ঋণ আবেদন ফরম
সমাজসেবার ঋনের জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে আবেদদন ফরম পুরণ করে আবেদন করতে হবে। অনেকে প্রশ্ন করেন ভাই আবেদন ফরম কোথায় পাব, আবেদন ফরম আপনি সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। কিংবা আপনার নিকটস্থ সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়েও সমাজসেবা ঋণ আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন। এই ফরম পুরণ করে জমা দেয়ার মাধ্যমে সমাজসেবার ঋণের জন্য আবেদন করতে হবে।
One Comment