প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা পর্ব ৫ সরকারী বাসে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা

প্রিয় প্রতিবন্ধী ভাই বোন বন্ধুগণ, প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা সিরিজের নতুন আরেকটি পোস্টে আপনাকে জানাই সু স্বাগতম। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে, প্রতিবন্ধীদের সচেতন করার জন্য প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা নামের এই সিরিজটি চালু করেছি। বিগত চার টি পর্বে প্রতিবন্ধীদের জন্য দেয়া বাংলাদেশ সরকারের কিছু সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আপনি যদি এই সিরিজের আগের চারটি পোস্ট পরে থাকে তবে সেগুলি পড়ার জন্য বিণিত অনুরোধ রইল। এই পোস্টটি এই সিরিজের ৫ নাম্বার পোস্ট হতে যাচ্ছে। আমরা যারা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছি আমরা যদি না জানি বাংলাদেশ সরকার এবং বিভিন্য বেসরকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিবন্ধীদের কি কি সুযোগ সুবিধা প্রদান করে তবে আপনার সে সকল সুযোগ সুবিধা পাব কি করে। তাই আসুন আমরা সবাই আমাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হই।
এই পোস্টে সরকারী বাসে প্রতিবন্ধীদের জন্য হাফ ভাড়া বিষয়ে আলোচনা করা হবে, তাই এই পোস্টটি সম্পুর্ণ অধ্যায়ন করার জন্য সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি সবিনয়ে অনুরোধ করছি। শুধু নিজে পড়লেই হবে না আপনার পরিচিত অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের সাথে এই পোস্টটি শেয়ার করুন, নিচে সচেতন হবার পাশাপাশি অন্যদের সচেতন হবার সুযোগ করে দিন।
সরকারী বাসে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা
বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে বিভিন্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে, তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকার সরকারী বাসে প্রতিবন্ধীদের জন্য হাফ ভাড়া নির্ধারণ করেছে। আচ্ছা হাফ ভাতার বিষয়টি আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে উদাহারণ দিয়ে বলছি। মনে করা যাক আপনি ঢাকা মিরপুর থেকে দানমন্ডি যাবেন, অন্য যাত্রিদের যদি ৫০ টাকা ভাড়া দিতে হয় তবে আপনাকে ২৫ টাকা দিতে হবে।
কারণ সরকার সকল সরকারী বাসে প্রতিবন্ধীদের জন্য হাফ ভাড়া নির্ধারণ করেছে। তবে এই সুবিধা পেতে গেলে আপনার প্রতিবন্ধী কার্ড বা প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র থাকতে হবে। অনেকেই বলতে পারেন ভাই প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র আবার কি? তাদের জন্য বলতে চাই আপনার যদি সমাজসেবা থেকে দেয়া সুবর্ণ নাগরিক কার্ড থাকে তবে বুঝে নেবেন আপনার প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র আছে।
কারণ সুবর্ণ নাগরিক পরিচয়পত্রই হল প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র। বাসের কন্টাকটার যখন আপনার কাছে ভাড়া চাইবে কিংবা টিকেট কাউন্টারে যখন টিকেট ক্রয় করবেন তখন কন্টাকটার বা টিকেট কাউন্টারের দায়িক্তে থাকা ব্যক্তিকে আপনার প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র দেখিয়ে বলবেন আপনি একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। টিকেট কাউন্টারে দায়িক্তরত ব্যক্তি বা বাসের কন্টাকটার আপনার থেকে অর্থেক ভাড়া নেবে।
এই সুবিধা কি শুধু ঢাকাতেই পাওয়া যায়
এবার আমরা আলোচনা করব সরকারী বাসে হাফ ভাড়া সুবিধা কি শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই পাওয়া যায় নাকি দেশের অন্যান্য প্রান্তেও পাওয়া যায়। বাংলাদেশ সরকার সারা বাংলাদেশেই প্রতিবন্ধীদের এই সুবিধাটি দিয়ে থাকে। তাই আপনি যে কোন স্থানেই সরকারী বাসে ওঠেন না কেন আপনার প্রতিবন্ধী কার্ডটি দেখিয়ে আপনি হাফ ভাড়া দিতে পারবেন।
যদি কেউ আপনার থেকে ফুল ভাড়া দাবি করে তখন তাকে বলবেন বাংলাদেশ সরকার সরকারী বাসে প্রতিবন্ধীদের ভাড়া অর্ধেখ সিথিল করেছে। সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিই সরকারী বাসে হাফ ভাড়া দেবে। তবুও যদি তিনি আপনার সাথে বেয়াদবি করে কিংবা অন্য কোন ভাবে আপনাকে বিরক্ত করে তবে আপনি জাতীয় হেল্পলাইন নাম্বার ৯৯৯ তে কল করতে পারেন এবং আপনার সমস্যার কথা জানিয়ে আইনি সুরক্ষা চাইতে পারেন।
সরকারী বাসে প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত আসন
সরকারী বাসে শুধুমাত্র প্রতিবন্ধীদের জন্য হাফ ভাড়াই নয়, সরকারী বাসে প্রতিবন্ধীদের জন্য সিট রিজার্ভ থাকে। আপনি যদি কখন সরকারী বাসে ওঠেন তবে বাসে ওঠার পর কন্টাকটারকে বলবেন আপনি একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি তিনি যেন প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে আপনাকে বসানোর ব্যবস্থা করে দেয়।
আপনার অনুরোধ পাবার পর তিনি আপনাকে প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত আসনে বসিয়ে দেবার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন। মনে রাখবেন সরকারী বাসে প্রতিবন্ধীদের জন্য হাফ ভাড়া এবং সিট রিজার্ভ এটা সরকারী নিয়ম, তাই সকল সরকারী বাসের কর্মচারী এই নিয়ম মানতে বাধ্য থাকবে।
প্রিয় পাঠক প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা সিরিজটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন, আপনি আর কোন বিষয়ে জানতে সেটাও কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। মনে রাখবেন আপনার একটি কমেন্ট আমাদের কাছে অত্যান্ত মুল্যবান।
আমরা আপনার কমেন্ট থেকে পরবর্তি পোস্ট লিখার টপিক নির্ধারণ করব তাই সকলের কমেন্ট আশা করছি। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন এবং আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকবেন, এতটা সময় দিয়ে লেখাটি পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।