প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা পর্ব ১ শিক্ষায় প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা

প্রিয় প্রতিবন্ধী ভাই বোন বন্ধুগন আশা করি সকলে ভাল আছেন। আমাদের পাঠকদের জন্য আজ একটি নতুন সিরিজ শুরু করতে যাচ্ছি যে সিরিজের নাম হবে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা। এই সিরিজ শুরু করার কোন পরিকল্পনা আমার ছিলনা। কিন্তু অনেক প্রতিবন্ধী ভাই বোন আমাকে বলেছেন বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীরা কি ধরণের সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে। অনেক চিন্তা ভাবনা করে দেখলাম আসলেই, আমাদের দেশে প্রতিবন্ধীদের কি ধরণের সুযোগ সুবিধা দেয়া হয় সে সম্পর্কে অনেক প্রতিবন্ধীরাই যানে না, এজন্য প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে আমার বিস্তারিত আলোচনা করা উচিত। কিন্তু প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে একটা দুইটা পোস্টে আলোচনা সম্ভব হবে না এজন্য প্রয়োজন সিরিজ আলোচনার তাই নতুন এই সিরিজটাক শুরু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম।
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অনুযায়ি দেশে প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা ৪৬ লাখ। এই বিরাট জনশক্তিকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে বাংলাদেশ সরকার ও বিভিন্য বেসরকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিবন্ধীদের বিভিন্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা সে সকল সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। কোন সুযোগ সুবিধা দিয়ে আলোচনা শুরু করব তাই ভাবছি। আচ্ছা শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা শুরু করলে কেমন হয়? যেহেতু শিক্ষা জাতীয় মেরুদন্ড তাই আমার মনে হয় শিক্ষায় প্রতিবন্ধীদের সরকারী সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা শুরু করাটাই ভাল। তো আর দেরি কেন চলুন শুরু করি একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বাংলাদেশে শিক্ষা জীবনে কি কি সযোগ সুবিধা পায় সে সম্পর্কে আলোকপাত করা যাক। আপনাদের সকলের কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ আপনারা এই পোস্টটি সম্পুর্ণ পড়বেন যদি সম্পুর্ণ না পড়েন তবে অনেক কিছুই আপনার জানা বা বোঝার বাইরে থেকে যেতে পারে।
শিক্ষায় প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা
বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিভিন্য সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকে যেমন, বাংলাদেশ সরকার গরীব মেধাবী প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মাসিক উপবৃত্তি দিয়ে থাকে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর এই উপবৃত্তি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। একজন প্রতিবন্ধী প্রথম শ্রেনীতে ভর্তি হলেই এই উপবৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত প্রতি মাসে ৯৫০ টাকা হরে উপবৃত্তি দেয়া হয়। যা প্রতি তিন মাস পর পর শিক্ষার্থীর মোবাইল ব্যংকিং সার্ভিস বিকাশ বা নগদের মাধ্যমে জি টু পি পদ্ধতিতে প্রদান করা হয়। এভাবে মাধ্যমিক স্তর, উচ্চ মাধ্যমিক এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত সরকার এই উপবৃত্তি করে। এই উপবৃত্তির কারণে অনেক গরীব মেধাবী প্রতিবন্ধী লেখাপড়া করতে পারছে।
কিভাবে প্রতিবন্ধী উপবৃত্তি পাওয়া যায়
প্রতিবন্ধী উপবৃত্তির জন্য আপনাকে প্রথমে আবেদন করতে হবে। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে প্রতি বছর একবার উপবৃত্তির আবেদন চেয়ে প্রজ্ঞাপন দেয়া হয়। সেই প্রজ্ঞাপনে বর্নিত নিয়ম অনুযায়ি একজন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারে। আবেদন করার পর উপবৃত্তি মঞ্চুরি কমিটির কাছে আপনার উপবৃত্তির আবেদনটি চলে যাবে। সেই কমিটি যদি মনে করে আপনাকে প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি দেয়া যায় তবে তারা আপনার প্রতিবন্ধী উপবৃত্তির আবেদনটি অনুমোদন করবে। প্রতিটি জেলায় একটি করে প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি মঞ্জুরি কমিটি আছে, যে কমিটির প্রথান জেলা প্রশাসক মহোদয়। এছাড়াও সেই কমিটিতে আছে থাকেন, উপ পরিচালক জেলা সমাজসেবা কার্যালয় সহ আরও অনেক ব্যক্তি। তাই আবেদন করার পর যদি পারেন তবে আপনি জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করবেন। তাকে আপনার প্রয়োজন এবং সমস্যার কথা জানাবেন। তিনি যদি চান তবে আপনার উপবৃত্তির আবেদনটি অনুমোদন করতে পারবেন কারণ জেলা প্রশাসক প্রতিবন্ধী উপবৃত্তি মঞ্চুরি কমিটির প্রথান।
প্রিয় পাঠক আজ তাহলে এ পর্যন্তই, আগামি পোস্টে প্রতিবন্ধীদের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কিত নতুন কোন আলোচনা নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। এ পর্যন্ত সবাই আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত চোখ রাখবেন। কারণ প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্য তথ্য আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত প্রকাশ করি। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন এবং আমাদের সাথেই থাকবেন পরবর্তি পোস্টে আবার আলাপ হবে, পরবর্তি পোস্টটি পড়ার জন্য আগাম আমন্ত্রন জানিয়ে বিদয় নিচ্ছ সবাই ভাল থাকবেন।