প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান পর্ব ২ ব্লগিংয়ের মাধ্যমে কর্মসংস্থান

প্রিয় পাঠক এই পোস্টটিও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ভাবে রচিত। প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান সিরিজের আরেকটি নতুন পোস্টে আপনাকে জানাই সুস্বাগতম। আমাদের আজকের বিষয় বøগিং করে উপার্জনের উপায়। এবার আশা করি বুঝতে পেরেছেন এখন কি বিষয়ে আলোচনা হতে যাচ্ছে।
বিগত পর্বে আমরা বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ সামাজিক অবস্থা এবং প্রতিবন্ধীদের চাকরির বাজার বিষয়ে কিঞ্চত আলোকপাত করেছি। আগের পর্বটি যারা পড়েন নি তাদের কাছে বিণিত অনুরোধ করছি আপনারা আগের পর্বটি পড়ে নিন। বর্তমান সময়ে অনেক ছেলে মেয়ে নিজের ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করছে।
আমরা প্রতিবন্ধীরা পিছিয়ে থাকব কেন। আমরাও অন্যান্যদেম মত অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করতে পারি। এই পোস্টে বøগিং করে কিভাবে টাকা পয়সা উপার্জন করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
তাই যে সকল প্রতিবন্ধী ভাই বোনদের অনলাইনে কাজ করার আগ্রহ আছে তাদের বলছি এই পোস্টটি মনযোগ দিয়ে পড়বেন। এই পোস্টে আমরা আলোচনা করব কিভাবে বøগিং করে টাকা আয় করা যায়।
ব্লগিং কি
বøগিং করে টাকা উপার্জন করার আগে আমাদের জানতে হবে বøগিং কি, কিংবা বøগিং বলতে আসলে কি বোঝায়। তো চলুন মুল আলোচনা শুরু করা যাক, বøগিং বলতে মুলত ভিডিও বা লেখার মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা বা মতামত শেয়ার করাকে বোঝায়। যেমন আমি আপনাদের জন্য আমার এই ওয়েবসাইটে পোস্ট লিখছি।
এটাও কিন্ত বøগিংয়ের অংশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে অনেক ব্যক্তি নিজের মতামত বা অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকে সেগুলিকেও বøগ বলে।
আপনি হয়ত কয়েকটি শব্দের সাথে পরিচিত আছেন যেমন, ফুড ব্লগার, ট্রাভেল ব্লগার ইত্যাদি। একজন ফুড ব্লগার বিভিন্য হোটেল বা রেস্টুডেন্টে গিয়ে খাবার খায় এবং সেই খাবারটি কেমন খেতে এবং খাবারের মান কেমন তা ভিডিও বা আর্টিকেলের মাধ্যমে ফেইসুবক, ইউটিউব বা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে থাকে। ফুড ব্লগিং বলতে মুলত এটাকেই বোঝানো হয়।
একজন ট্রাভেল বøগার বিভিন্য স্থানে বেড়াতে যায় এবং সেই জায়গাটা কেমন, সেখানে কি কি দর্শনীয় জিনিস আছে, সেখানের সামাজিক ও ভৌগলিক পরিবেশ কেমন তা ভিডিও বা আর্টিকেলের মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করাকেই মুলত ট্রাভেল ব্লগিং বলে। আমি নিজেও কিন্তু ব্লগার।
সেটা কিভাবে? আমি প্রতিবন্ধীদের প্রয়োজনীয় বিভিন্য তথ্য এই ওয়েবসাইটে আর্টিকেলের মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করে থাকি তাই আমি নিজেও ব্লগার। প্রিয় পাঠক আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন ব্লগিং বলতে আসলে কি বোঝায়।
আপনি যদি এখনও বুঝতে না পারেন কিংবা কোন পয়েন্ট বুঝতে সমস্যা হয় তবে কমেন্ট করে আপনার প্রশ্ন আমাদের জানান আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব কথা দিলাম।
ব্লগিং করে কিভাবে টাকা আয় করা যায়
ব্লগিং কি সে সম্পর্কে আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এবার আমরা আলোচনা করব ব্লগিং করে কিভাবে টাকা উপার্জন করা যায়। প্রিয় পাঠক ব্লগিং কতটা সম্ববনাময় একটি সেক্টর তা বোঝানোর জন্য আমি মিরাজ আফ্রিদির উদাহারণ দিতে পারি।
আপনারা যারা মিরাজ আফ্রিদিকে চেনেন তারা তো তার সম্পর্কে জানেনই। আর যারা মিরাজকে চেনেন না তাদের জন্য বলছি। মিরাজ আফ্রিদি পাবনা জেলার একটি প্রত্যান্ত গ্রামের ছেলে। মিরাজ একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার দুইটি হাত নেই। হাত না থাকার কারণে মিরাজ কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করতে পারেনি।
তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমার মা আমাকে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করার জন্য নিয়ে যায়, কিন্তু আমার দুটি হাত না থাকার কারণে মাদ্রাসার হুজুর আমাকে মাদ্রাসায় ভর্তি নেয়নি”। পরে মিরাজ ফেইসবুক পেইজ এবং ইউটিউচ চ্যানেল খুলে বøগিং শুরু করে। মিরাজের বøগিংয়ের বিষয় ছিল তার দৈন্দন্দিন জীবন।
অর্থ্যাৎ মিরাজ সারা দিন কি করছে কোথায় যাচ্ছে কি খাচ্ছে কিভাবে গোসল করছে কিভাবে খাওয়া দাওয়া করছে ইত্যাদি।
বর্তমানে মিরাজ একজন সফল বøগার। বর্তমানে সে ফেইসবুক এবং ইউটিউবের মাধ্যমে প্রতি মাসে দুই লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করে। বøগিংয়ের টাকা দিয়ে সে একটি উন্নতমানের সেলুন করেছে। একটি মাদ্রাসা করেছেন।
মিরাজ যদি এত বাধা অতিক্রম করে আজ লাখপতি হতে পারে তবে আপনি আমি কেন পাবর না?। আমরা যদি চেষ্টা করি এবং আমাদের যদি আগ্রহ ও ধৈর্য থাকে তবে আমরাও মিরাজের চেয়ে বড় বøগার হতে পারি। যাই হোক মুল আলোচনায় ফিরে আসি।
আপনি যদি ভিডিও বøগ বানাতে চান তবে আপনার একটি স্মর্টফোন থাকলেই চলবে। স্মার্টফোন দিয়ে ভিডিও করে সেই ভিডিও ইউটিউব চ্যানেলে পাবলিশ করতে হবে। আপনার ভিডিও মানুষ দেখা শুরু করলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি মনিটাইজ হয়ে যায়ে।
চ্যানেল মনিটাইজ করার জন্য কিছু শর্ত আছে তা হল। আপনি চ্যানেলে ভিডিও আপলোড শুরু করার পর প্রথম এক বছরের মধ্যে এক হাজার স্বাবসক্রাইবার এবং চার হাজার ঘন্টা ওয়াচটাইম জেনারেট করতে পারলে আপনি মনিটাইজের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আপনি যদি ইউটিউবের সব নিয়ম মেনে ভিডিও বানিয়ে থাকেন তবে আবেদন করার পর আপনার চ্যানেলে মনিটাইজ অন হয়ে যাবে তখন আপনিও ইউটিউব থেকে টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
আপনি যদি ভিডিও বানাতে না চান তবে আপনি আমার মত আর্টিকেল লিখেও টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এজন্য প্রথমে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করতে হবে। কিভাবে ওয়েবসাইট বানাতে হয় তা জানতে আপনি ইউটিউবে সার্চ করুন “কিভাবে ওয়েবসাইট বানাতে হয়”।
এটা লিখে সার্চ করলে আপনি কিছু ভিডিও পাবেন সেগুলি অনুসরণ করে খুব সহজে আপনি একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারবেন। আর যদি আপনি নিজে ওয়েবসাইট বানাতে না চান তবে আমার সাথে যোগাযোগ করুন আমি আপনাকে খুব অল্প মুল্যে ওয়েবসাইট বানিয়ে দেব।
আপনি যে বিষয়ে পারদর্শি সে বিষয়ে আর্টিকেল নিলে ব্লগিং শুরু করতে পারেন।
আমি যেহেতু প্রতিবন্ধীতা সম্পর্কিত বিষয়গুলি মোটামুটি বুঝি তাই আমি প্রতিবন্ধীতা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট বানিয়েছি। ওয়েবসাইট বানানোর পর গুগল অ্যডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে।
গুগল অ্যডসেন্স কি? গুগল অ্যডসেন্স হল একটি বিজ্ঞাপন প্রদর্শন সিস্টেম। এখানে আবেদন করার পর আপনার আবেদনটি যদি গৃহিত হয় তবে আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখানো হবে। সেই বিজ্ঞাপন থেকে আপনি টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
গুগল অ্যডনেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইউটিউবে “গুগল অ্যডসেন্স কি” তা লিখে সার্চ করলেই আপনি বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
UmrZho NrbnGQkO TDghN Zstqxi XltWX pLf