প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান পর্ব ১ হাঁস মুরগি পালন

প্রিয় প্রতিবন্ধী ভাই বোন বন্ধুগণ প্রতিবন্ধী ইনফো ডট নেট ওয়েবসাইটের নতুন একটি পোস্টে আপনাকে জানাই স্বাগতম। প্রতিবন্ধীদের কর্ম সংস্থান সৃষ্ট্রিকল্পে আমরা নতুন একটি ধারাবাহিক সিরিজ চালু করতে যাচ্ছি।
যে সিরিজের নাম হবে প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান। এই সিরিজের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করব প্রতিবন্ধীদের আত্ব কর্মসংস্থান সৃষ্ট্রি সম্পর্কিত পুর্ণাঙ্গ গাইডলাইন প্রদান করতে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি চকারি পাওয়া অত্যান্ত কষ্টসাধ্য।
কিছু প্রতিবন্ধী ভাই বোন সরকারী বেসরকারী চাকরি করছেন বটে তবে তার পরিমাণ খুবই কম।
যেখানে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অনুযায়ি দেশে প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা ৪৬ লাখ। সেখানে এক দু হাজার প্রতিবন্ধীর চাকরি হলে তাতে মোটা দাগে তেমন ইতিবাচক প্রভাব পরে না। তাই আমরা এই সিরিজের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের আত্ব নির্ভরশীল হয়ে ওঠার গাইডলাইন দেবার চেষ্টা করব।
আজ আমরা খুব অল্প পুজির একটি ব্যবসা সম্পর্কে আলোচনা করব। এই ব্যবসার মাধ্যমে সামান্য পুজি বিনিয়োগ করে একজন প্রতিবন্ধী মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ আপনারা এই পোস্টটি মন দিয়ে সম্পুর্ণ পড়বেন।
হাঁস মুরগি পালন
বর্তমানে আমরা যে সকল প্রতিবন্ধী বেকার আছি হাঁস মুরগি পাল হতে পারে আমাদের আয়ের একটি প্রথানতম উপায়। আমাদের দেশে ডিম এবং মুরগির মাংশের ব্যাপক চাহিদা আছে। এই চাহিদাকে যদি আমরা সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারি তবে আমাদের আর বেকার থাকতে হবে না।
অন্যের চাকরি না করে নিজের বাড়ীতে বসেই আমরা মাসে দশ থেকে পনের হাজার টাকা আয় করতে পারি। আপনি যদি গ্রামে বাস করেন তবে আপনার বাসা বাড়ীর আঙ্গিনায় নিশ্চয় কিছুটা খালি জায়গা আছে আপনি চাইলে সেখানে ছোট একটি ঘর করে সেই ঘরে হাঁস মুরগি পালন শুরু করতে পারেন।
আপনার বাসা যদি শহরে হয় তবও কোন সমস্যা নেই। আপনার বাসা বাড়ীর ছাদে ছোট একটি ঘড় করে সেই ঘরে আপনি হাঁস মুরগি পালন করতে পারবেন।
কিভাবে হাঁস মুরগি পালনের প্রশিক্ষন নেবেন
হাঁস মুরগি পালন শুরু করার আগে আমাদের হাঁস মুরগি পালন সংক্রান্ত প্রশিক্ষন গ্রহণ করতে হবে। আমরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে হাঁস মুরগি পালন সংক্রান্ত প্রশিক্ষন গ্রহণ করতে পারি। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর হাঁস মুরগি পালন সংক্রান্ত দুই মাস মেয়াদি প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে।
এই প্রশিক্ষন নিতে আপনাকে কোন টাকা বা ফি দিতে হবে না বরং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রশিক্ষন শেষে আপনাকে চার হাজার টাকা যাতায়াত খরচ বাবদ প্রদান করবে। কিভাবে প্রশিক্ষন নেবেন, কিভাবে ভর্তি হবেন এ সংক্রান্ত তথ্য জানতে আপনি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে যোগাযোগ করুন।
সারা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কার্যালয় আছে সেখানে গিয়ে অফিসারের সাথে দেখা করে তাকে জানান আপনি প্রশিক্ষন গ্রহণ করতে চান। তিনি আপনাকে প্রশিক্ষন গ্রহনের ব্যবস্থা করে দেবে। প্রশিক্ষন গ্রহণের জন্য অষ্টম শ্রেণী পাস হলেই হবে।
ব্যবসা শুরুর পুজি কোথায় পাবেন
যে কোন ব্যবসা শুরু করতে মুলধন বা পুজির প্রয়োজন হয়, যদি আপনার নিজশ্ব টাকা থাকে তবে আপনি সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন আর যদি আপনার নিজশ্ব টাকা না থাকে তবে আপনি ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।
প্রতিবন্ধীদের সাবলম্বি করে গড়ে তুলতে সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রতিবন্ধীদের ঋণ দিয়ে থাকে। আপনি চাইলে সমাজসেবার সেই ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। আর আপনি যদি চান তবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকেও ঋণ গ্রহন করতে পারবেন।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রশিক্ষন শেষে প্রশিক্ষনার্থীদের সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা দিয়ে থাকে। তাই পুজি কোথায় পাবেন এই চিন্তা আপনাকে করতে হবে না, আপনার প্রথম কাজ হল আপনি যে কাজটি করতে চান সে সম্পর্কে প্রশিক্ষন গ্রহণ করা।
এরপর সমাজসেবা অধিদপ্তর বা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ঋণ নিয়ে আপনি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।