বিনামুল্যে ক্রাচ পাবার উপায়

প্রিয় পাঠক প্রতিবন্ধী ইনফো ডট নেট এর পক্ষ থেকে একরাশ রক্তিম গোলাপের শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। আমরা সব সময় চেষ্টা করি প্রতিবন্ধীদের প্রয়োজনীয় তথ্যাদি আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা প্রতিবন্ধীদের সহায়ক উপকরণ সম্পর্কিত একটি বিষয়ে আলোচনা করব।
আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় হল বিনামুল্যে ক্রাচ পাবার উপায় সম্পর্কে। বাংলাদশে প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা সরকারি তথ্য অনুযায়ি ৪৬ লাখের বেশি। এর মাঝে বিরাট একটি অংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাছাড়া পক্ষাঘাত, সড়ক দুর্ঘটনা সহ বিভিন্য কারণে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশ সরকার শারীরিক প্রতিবন্ধীদের কল্যণে বিভিন্য পদক্ষেপ গ্রহণ ও ব্যস্তবায়ন করে আসছে। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীদের সহায়তার জন্য, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্য কর্মসূচী পরিচালনা করে আসছে। তাছাড়াও বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধী সেবা ও সহায়তা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
আমরা আজ আলোচনা করব কিভাবে প্রতিবন্ধী সেবা ও সহায়তা কেন্দ্র থেকে বিনামুল্যে ক্রাচ নেয়া যায়।
সারা বাংলাদেশের প্রান্তিক পর্যায়ের প্রতিবন্ধীদের কাছে সেবা ও সহায়তা প্রদানে জন্য, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, সারা বাংলাদেশের জেলা পর্যায়ে প্রতিবন্ধী সেবা ও সহায়তা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠান করেছে।
প্রতিবন্ধী সেবা ও সহায়তা কেন্দ্র প্রতিবন্ধীদের বিনামুল্যে থ্যারাপি সেবা, সহায়ক উপকরণ, প্রশিক্ষন, আর্থীক সহায়তা সহ বিভিন্য সুযোগ সুবিধা প্রদান করে। আমরা প্রতিবন্ধী সেবা ও সহায়তা কেন্দ্র থেকে দেয়া সকল সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করব।
যাই হোক আমাদের আজের আলোচ্য বিষয় হল: কিভাবে বিনামুল্যে ক্রাচ পাওয়া যায়।
কিভাবে ক্রাচ পাওয়া যায়
আপনি যদি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হন এবং আপনার চলাচলের জন্য যদি ক্রাচের প্রয়োজন হয়, তবে আপনি ক্রাচের জন্য আবেদন করতে পারবেন। বিনামুল্যে ক্রাচ পাবার জন্য আপনাকে প্রথমে প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তার বরাবর একটি আবেদনপত্র লিখতে হবে।
কিভাবে আবেদনপত্রটি লিখবেন তার একটি নমুনা নিচে দেয়া হল। আপনি চাইলে এই নমুনা দেখে আবেদনপত্র লিখতে পারবেন। কিংবা আপনি যদি নিজেরই আবেদনপত্র লিখতে পারেন তবে নিজেই একটি আবেদনপত্র লিখে নিতে পারেন।
কিভাবে ক্রাচের জন্য আবেদনপত্র লিখবেন
ক্রাচ পাবার জন্য প্রথমে আপনাকে ক্রচের জন্য আবেদন করতে হবে। আপনি যদি সত্যিই শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে থাকেন এবং ক্রাচ ব্যবহার করে চলাফেরা করেন তবেই আপনি ক্রাচের জন্য আবেদন করতে পারবেন, এ সকল শর্ত যদি পুরণ করতে না পারেন তবে ক্রাচের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। আবেদনপত্র লেখার নমুনা নিচে দেয়া হল।
বরাবর,
প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তার
বগুড়া (বগুড়ার স্থানে আপনি নিজে যে জেলায় থাকেন সেই জেলার নাম লিখবেন)
বিষয়: ক্রাচ চেয়ে আবেদন প্রসঙ্গে।
জনাব, যথাযথ সম্মান প্রদর্শন পূর্বক সবিনয় নিবেদন এই যে, আমি (আমির স্থানে আপনি আপনার নাম লিখবেন)। পিতা: (এখানে আপনি আপনার নিজের পিতার নাম লিখবেন)। মাতা: (এখানে আপনি আপনার নিজের মায়ের নাম লিখবেন)। ঠিকানা: (এখানে আপনার পুর্ণ ঠিকানা লিখবেন)। একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।
আমি ক্রাচ ছাড়া চলাচল করতে পারি না। আমি একজন গরীব ও কর্মহীন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। আমার পক্ষে একটি ক্রচ ক্রয় করে ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তাই আপনি যদি আমাকে একটি ক্রাচ দেয়ার ব্যবস্থা করেন তবে আপনার নিকট বাধিত থাকব।
এতঃএব জানবের নিকট আমার আকুল আবেদন এই যে, আমাকে একটি ক্রাচ প্রদানের ব্যবস্থা করতে জানবের সদয় মর্জি হয়।
বিণিত
এখানে আপনি স্বাক্ষর করবেন
(এখানে ব্রাকেটের ভেতর আপনার পুর্ণ নাম লিখবেন)
তারপর আপনার মোবাইল নাম্বারটি লিখবেন।
অবশ্যই আপনার সচল মোবাইল নাম্বারটি লিখবেন। কারণ আপনার আবেদনটি যদি গৃহিত হয় তবে মোবাইলের মাধ্যমে আপনার সাথে যোগাযোগ করা হবে।
আবেদনপত্রটি চাইলে আপনি হাতে লিখতে পারেন কিংবা কম্পিউটারে টাইপ করেও লিখতে পারেন।
যদি সম্ভব হয় তো কম্পিউটারে টাইপ করেই লিখবেন। লেখা হয়ে গেলে আবেদনপত্রটি একটি খামে ভরবেন।
খামের ডান পাশে লিখবেন প্রাপক, প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা তারপর আপনার জেলার নাম লিখবেন।
খামের বাম পাশে লিখবেন প্রেরক, তারপর আপনার নাম লিখবেন, তারপর আপনার মোবাইল নাম্বারটি লিখবেন। দরখাস্তের সাথে কিছু কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে তা নিচে বলা হল।
ক্রাচের জন্য আবেদন করতে কি কি কাগজপত্র দরকার
যে সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে তা হল, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি। প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্রের ফটোকপি। একটি সম্পুর্ণ ছবি।
সম্পুর্ন ছবি বলতে বোঝানো হয়েছে, আপনার ছবিটি এমনভাবে তুলতে হবে যাতে করে আপনার প্রতিবন্ধকতা বোঝা যায়। এসকল কাগজপত্র আবেদন পত্রের সাথে পিন মেরে সংযুক্ত করে প্রতিবন্ধী সেবা ও সহায়তা কেন্দ্রে গিয়ে প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে দেখা করে তার হাতে আবেদনটি জমা দেবেন। তিনি আপনার আবেদনটি যাচাই বাছাই করে দেখবেন।
তিনি যদি মনে করেন আপনার আবেদনটি গৃহণ করা যায়, তবে তিনি আবেদনটি অনুমোদন করবেন। আপনার আবেদনটি অনুমোদিত হলে আপনাকে মোবাইলের মাধ্যমে জানানো হবে এবং কবে কোথায় আসতে হবে তা জানিয়ে দেয়া হবে।