সরকারী দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সুযোগ সুবিধা

প্রিয় পাঠক আমাদের ওয়েবসাইটের নতুন একটি পোস্টে আপনাকে জানাই শুস্বাগতম। আজ আমাদের আলোচ্য বিষয় হল সরকারী দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সুযোগ সুবিধা। বাংলাদেশ সরকার দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধীদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে স্বমন্বিত অন্ধ শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষায়িত আবাসিক হোস্টেল সুবিধা প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশ সরকার চায় একজন দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী যেন দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী হবার কারণে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়।
সরকার চায় আর দশজন সাধারণ মানুষের মত দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধীরাও লেখাপড়া করুন, উচ্চ শিক্ষা অর্জন করুক। সরকারী এই আবাসিক হোস্টেলে কি কি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়, কিভাবে এখানে ভর্তি হয়া যায়, কেমন খাবার দাবার দেয়া হয়, থাকার পরিবেশ কমেন ইত্যাদি বিষয়ে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। আপনি যদি দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী হন কিংবা আপনার পরিবারে কোন দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী থাকে অথবা আপনার পরিচিত কোন দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী থাকে তবে এই পোস্টটি অবশ্যই পড়বেন।
দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী স্কুলের সুযোগ সুবিধা
বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীদের প্রতি বিশেষ য¦ন্তশীল, তাই বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীদের লেখাপড়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করেছে। বাংলাদেশ সরকার জেলা পর্যায়ে একটি করে দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী আবাসিক হোস্টেল নির্মান করেছে। একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাথে সাথে এই দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী আবাসিক হোস্টেল সংযুক্ত থাকে। যেমন কুষ্টিয়া জেলায় একটি দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী আবাসিক হোস্টেল আছে, এই হোস্টেলটি কুষ্টিয়া হাই স্কুলের সাথে সংযুক্ত। যে সকল দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধীরা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত আছে তারা কুষ্টিয়া হাই স্কুলে লেখাপড়া করছে এবং কুষ্টিয়া হাই স্কুলের পাশেই অবস্থিত দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী আবাসিক হোস্টেলে থাকে এবং খায়। তাদের থাকা ও খাওয়ার সকল খচর বাংলাদেশ সরকার বহন করে।
শুধুমাত্র থাকা খাওয়ার খরচই না বাংলাদেশ সরকার সকল দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বই, খাতা, কলম, চিকিৎসা, পোষাক ইত্যাদি সকল ব্যয়ভারও বহন করে। বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত কোন দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী ছাত্র যদি অসুস্থ্য হয়ে পরে তবে সরকারি খরচে তার যাবতিয় চিকিৎসা করা হয়। শিক্ষার্থীদের নিত্য প্রয়োজনীয় পোষাক ছাড়াও বছরে দুইটি ইদে শিক্ষার্থীদের নতুন জামা,প্যান্ট ও জুতা সরকারি খরচে কিনে দেয়া হয়। তাছাড়া দৈন্দন্দিন ব্যবহারের জন্য সকল দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধীদের লুংগি, গেঞ্জি, স্যান্ডেল সরকার সরবরাহ করে।
দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী আবাসিক হোস্টেলে কেমন খাবার দেয়া হয়
আমরা আগেই আলোচনা করেছি দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধীদের খাবার খরচও বাংলাদেশ সরকার বহন করে। প্রতিদিন সকালে দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধীদের সাদা ভাতের সাথে ভাজি বা ভর্তা সরবরাহ করা হয়। কোন দিন খিচুরি ভাতের সাথে ডিম ভাজি বা ভরতা সরবরাহ করা হয়। দুপুরে সাদা ভাতের সাথে মাছের তরকারী সরবরাহ করা হয়। তবে সপ্তাহে দুই দিন সাদা ভাতের সাথে মাংশ সরবরাহ করা হয়। বিকেলে নাস্তা হিসেবে মুড়ি চানাচুরের দেয়া হয় কিংবা চা বিস্কিট সরবরাহ করা হয়। রাতে খাবারে সাদা ভাতের সাথে মাছ বা সবজির তরকারী সরবরাহ করা হয়। এসকল খাবার দাবার সম্পুর্ণ বিনামুল্যে দেয়া হয়, সরকার শিক্ষার্থীদের থেকে কোন টাকা পয়সা প্রহণ করে না।
সরকারী খরচে লেখা পড়া
দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী আবাসিক হোস্টেলে যে সকল দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধীরা শিক্ষা গ্রহণ করে তাদের লেখাপড়ার জন্যও কোন টাকা পয়সা খরচ করতে হয় না। তাদের স্কুলে ড্রেস সরকার তার নিজ খরচে তৈরী করে দেয়। তাদের স্কুলে যাবার জন্য রাস্তা খরচও দেয় সরকার। এছাড়াও তাদের খাতা কলম কেনার জন্য সরকার টাকা দেয়। তাদের লেখাপড়ার মান বৃদ্ধির জন্য সরকারী খরচে হোস্টেলে হাউজ টিউটার রাখা হয়, হাউজ টিউটার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার তদারকি করে এবং নিয়মিত পড়ায়।
দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী আবাসিক হোস্টেলের সিট সংখ্যা কত
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্মিত দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী আবাসিক হোস্টেলের আসন সংখ্যা দশটি। অর্থ্যাৎ প্রতিটি হোস্টেলে দশজন করে শিক্ষার্থী থাকতে পারবে। এখন প্রশ্ন হল এখানে কি শুধুমাত্র দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধীরাই থাকতে পারে নাকি অন্যান্য প্রতিবন্ধীরাও থাকতে পারে। উত্তর হল, না, দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধী আবাসিক হোস্টেলে শুধুমাত্র দৃষ্ট্রি প্রতিবন্ধীরাই থাকতে পারে এখানে অপ্রতিবন্ধী বা অন্যান্য প্রতিবন্ধীরা থাকতে পারবে না। অনেকে প্রশ্ন করেন এখানে কি মেয়েরা থাকতে পারবে।
উত্তর হল এসকল আবাসিক হোস্টেলগুলি বিশেষ ভাবে বালক বা বালিকাদের জন্য আলাদা ভাবে তৈরী করা হয়, অর্থ্যৎ বালকদের জন্য নির্মিত হোস্টেলে বালিকারা থাকতে পারবে না, আবার বালিকাদের জন্য নির্মিত হোস্টেলে বালকগণ থাকতে পারবে না। প্রিয় পাঠক আশা করি বুঝতে পেরেছেন, আপনি যদি কাউকে এসকল হোস্টেলে রাখতে চান তবে আগে খোজ নেবেন এটা বালক নাকি বালিকাদের হোস্টেল।